কম খরচে বগালেক আর ৩১৭২ ফুট উঁচু কেওক্রাডং পাহাড় জয়।

#যাওয়া_থাকা_খাওয়া : ঢাকা থেকে রাতের বাসে করে চলে আসুন বান্দরবান। সৌদিয়া, হানিফ, শ্যামলি, ডলফিন বাসে করে যেতে পারবেন, যেতে সময় লাগবে ৮-১০ ঘন্টা। সকালে বান্দরবান নেমে চলে যান রোমা বাস্ট্যান্ড। সেখান থেকে লোকাল বাসে (বাসভাড়া ১৩০ টাকা) অথবা চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে চলে আসুন রোমা বাজারে। এবার গাইড ঠিক করে ফেলুন, গাইড তার প্রয়োজনীয় কাজ করতে থাকবে সেই ফাকে দুপুরের খাবার খেয়ে নিন হোটেল থেকে। মনে রাখবেন গাইড পার ডে ৬০০ টাকা করে নিবে এবং রওনা দেবার পর গাইডের থাকা খাওয়া খরচ আপনাদেরকে বহন করতে হবে। প্রয়োজনী কাজ তথা আর্মিতে নাম এন্ট্রি করে রওনা দিন চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে। সবচেয়ে ভালো হয় আরও কোন গ্রুপ খুজে পেয়ে গেলে তাদের সাথে চলে যান তাতে টাকাও বাঁচলো। এবার কমলাবাজার নেমে বাশ কিনে নিন। এইবার খাড়া পাহাড়ে ৪০মিনিট হাটার পর ই বগালেক চলে আসুন। আবারও আর্মিতে নাম এন্ট্রি করে কটেজে উঠে পরুন। কটেজ পার হেড (১৫০/২০০) টাকা। খাওয়া (১০০/২০০) টাকা প্যাজেক সিস্টেম। সেদিন বগালেক থেকে পরদিন সকালে জলদি উঠে নাস্তা করে সকাল ৮টার ভেতর বেড়িয়ে পরবেন। আবার আর্মিতে নাম এন্ট্রি করে রওনা দিন কেওক্রাডংয়ের পথে। এই পথ কখনও খাড়া উচু কখনওবা খাড়া নিচু। মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নিয়ে নিয়ে চলে আসুন গাইডের দেখানো পথে। পথে দেখা মিলবে চিংড়ী ঝর্না, আর বান্দরবানের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম ‘দার্জিলিং পাড়া’। সেই সাথে মাঝপথে পাহাড়ি আদিবাসীদের দেখা মিলবে যারা বিভিন্ন ফল নিয়ে বসে আছে, চাইলেই খেতে পারবেন একদম ফ্রেশ পাহাড়ি ফল। মনে রাখবেন মিনিমাম ৪/৫ঘন্টা ট্র্যাকিং, এতটা পথ হাটার পর শেষে চলে আসবেন বাংলাদেশের তৃতীয় সর্বোচ্চ পাহাড় কেওক্রাডং। এইবার কেওক্রাডং এসে আর্মিতে নাম এন্ট্রি করতে হবে, যদিও সেটা সন্ধায়। যাই হোক, এইবার কটেজ নেন, গাইডকে বললেই হবে। খাওয়া দাওয়ার ব্যাবস্থাও আছে জনপ্রতি (১০০/১৫০) টাকা প্যাকেজ করে (ডিম, আলুভর্তা, মুরগী, মরিচ ভর্তা)। বিকালে চলে যান হ্যালিপ্যাডের দিকে। আর বলে রাখা ভালো পরদিন খুব ভোর সকালে উঠার চেষ্টা করবেন তাহলে দারুন উপভোগ করতে পারবেন। আট বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না, কেওক্রাডংয়ের সৌন্দর্য লেখায় প্রকাশ করা কখনই সম্ভবই না, এমনকি ক্যামেরার লেন্সেও আংশিক সৌন্দর্যও প্রকাশ পাবে না। সবটুকু নিজের চোখে সে সৌন্দর্য শুধু নিজের জন্য। একরাত কেওক্রাডং থেকে পরদিন সকাল সকাল বের হয়ে পরুন আগের ফিরতি বগালেকের পথে, বগালেক থেকে কমলাবাজার, সেখান থেকে রোমা বাজার। রোমা থেকে বান্দরবান। বান্দরবান থেকে ঢাকায় অথবা বান্দরবান থেকে চট্টগ্রাম এসে রাতের ট্রেনে ঢাকায়।

ঢাকা> বান্দরবান> রোমা বাজার> কমলাবাজার > বগালেক > কেওক্রাডং

#জানা_প্রয়োজন :

১। বগালেকে নামবেন না।
২। পাওয়ার ব্যাংক নিয়ে যাবার চেষ্টা করবেন যদিও ওখানে ফোন চার্জ করার ব্যাবস্থা আছে।
৩। পর্যাপ্ত পানি এবং স্যালাইন নিয়ে যাবার চেষ্টা করবেন।
৪। কাঁধের ব্যাগ চেষ্টা করবেন যতটা হালকা করার।
৫। গাইডকে না বলে হুট করে কোথাও চলে যাবেন না।
৬। সকল নির্দেশনা মেনে চলুন বিশেষ করে আর্মিদের।
৭। যে কোন সুবিধা অসুবিধা গাইডকে বলুন।
৮। এবং পাহাড় ট্র্যাকিং করার মানসিক শক্তি থাকতে হবে।

সবশেষে, প্লিজ দয়া করে পাহাড়ে যেখানে সেখানে ময়লা আবর্জনা এবং খাবারের প্যাকেট কিংবা অন্যান জিনিস ছড়িয়ে ছিটিয়ে ফেলবেন না। পাহাড় আমাদের দেশের সম্পদ। পাহাড়কে দূষনের হাত থেকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।

লেখা ও ছবিঃ ফারহান ফাহিদুর রহিম

keokradong

Keokradong