ব্যস্ত এই শহরের যাতাকলে যদি নিজেকে হারিয়ে ফেলেন তাহলে একদিনের জন্য ঘুরে আসুন
“ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর”
সদরঘাট থেকে সকাল ৬.০০ টা থেকে ৩০ মিনিট পরপর চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। ইমাম হাসান,বোগদাদিয়া বেশ ভালো লঞ্চ। আমরা গিয়েছিলাম বোগদাদিয়ায়। আপনি চাইলে ইমাম হাসানেও যেতে পারেন। ভাড়া ডেকে ১০০ টাকা মাত্র! সময় লাগবে ৩/৩.৩০ মিনিট কিংবা তার একটু বেশি।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটে পৌছানোর সাথে সাথেই চোখের সামনে একটা ব্যানার দেখবেন,যেখানে লেখা রয়েছে “ইলিশের বাড়ি চাঁদপুরে স্বাগতম”। শহরে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে দুপুরের খাবারের জন্য ঘাটে চলে আসুন। অনেক নামকরা হোটেল রয়েছে এখানে। খাবারের দাম নিয়ে একটু দামাদামি করে নিবেন। চাঁদপুরের মানুষদের যথেষ্ট ভালো মনে হয়েছে আমার কাছে,বেশ হেল্পফুল
আনোয়ার ভাইয়ের হোটেল বেশ বিখ্যাত, আমরা ওখানেই খেয়েছিলাম। ইলিশ নিজে দরদাম করে কিনে এনে হোটেলের বাবুর্চিদের কাছে দিলে তারাই রান্না করে দিবে অথবা তাদেরকেও কিনে আনতে বলতে পারেন। আমার মতে,নিজে কিনে আনাই ভালো! দাম ৬০০-৭০০ গ্রাম/১ কেজির গুলো ৭০০-১০০০ টাকা। মাথা আর লেজ ভর্তা করে দিতে বলবেন। সাথে বেগুনভাজা আর একটা মাছের ভর্তা দিতে বলবেন। তাজা মাছের স্বাদ নিয়ে চলে যাবেন বড় ষ্টেশন/ট্রেন স্টেশনে। এখানে একটা পার্ক আছে,এখানের তিন নদীর মোহনা। এখানে দেখবেন বড় বড় তেলবাহী ট্রলার, নৌকা, ইঞ্জিনচালিত ট্রলার। গাছের ছায়ায় নদীর ঢেউ আছড়ে পড়ার মৃদু শব্দ নিমিষেই আপনার সব ক্লান্তি দূর করে দিবে। শহরের বিষাক্ত বাতাসে হাপিয়ে উঠা আপনি এখানে তাজা বাতাসে একবার নিশ্বাস নিলেই মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য। দুপুরের খাবারের পর এই জায়গাটা নদী দেখার জন্য বেস্ট
এখান থেকে চরে যেতে পারেন ট্রলারে করে,ভাড়া ৫০ টাকা,রিজার্ভ ৩০ মিনিট ৪০০ টাকা । চরে দেখার মতো তেমন কিছুই নেই কিন্তু গোসল করে ফ্রেশ হতে পারবেন। পানি বেশ পরিষ্কার। সাতার না জানলেও ভয় নেই,অনেকখানি জায়গা হেটে যাওয়া যায় পানি কম থাকলে। যাই হোক,চরে হাটাহাটি/দাপাদাপি করে আবার বড় স্টেশনে ফিরে আসুন। এখান থেকে যাবেন কালীবাড়ি মোড়ে,অটোতে ভাড়া জনপ্রতি ১০ টাকা। সেখানে পাবেন বিখ্যাত “ওয়ান মিনিট আইসক্রিম”। যার স্বাদ আপনার ক্লান্তি কিছুটা হলেও দূর করবে।
আপনি চাইলে আবার তিন নদীর মোহনায় বসে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারেন।
অথবা বিকাল ৫টার লঞ্চ ধরে ঢাকায় ফেরার পথেও করতে পারবেন। দেখবেন,ইলিশ মাছ ধরার হাজারো নৌকা ভেসে থাকে নদীর কোল জুড়ে। সূর্য ডুবে যাওয়ার সময় এক অপার্থিব সৌন্দর্যে ভরে উঠে চারপাশ। একরাশ ভালোলাগা নিয়ে ফিরে আসুন প্রাণের শহরে।
বিঃদ্রঃ ভ্রমনকালে আপনার ব্যবহৃত কোন খাবারের প্যাকেট,পানির বোতল বা যেকোনো বর্জ্য দয়া করে নদীতে না ফেলে লঞ্চের ময়লার ঝুড়িতে/নির্দিষ্ট স্থানে ফেলুন।
ভালো রাখুন আমার দেশকে
লেখাঃ Mashfique Hasan Miraz
–
Leave A Comment
You must be logged in to post a comment.